'মহাভারত' এ কিভাবে উল্লেখিত হয়েছেন হনুমান

মহাবীর হনুমান ‘রামায়ণ’-এর চরিত্র।
তিনি অমর। তাই পরবর্তী মহাকাব্য
‘মহাভারত’-এও তাঁর সাবলীল উপস্থিতি
লক্ষ করা যায়। এই মহাকাব্যে তিনি
কেমন যেন এক ধীর-শান্ত ব্যক্তিত্ব।
তাঁর বীরভাব এখানেও বজায় রয়েছে
বটে। কিন্তু তার উপরে প্রলেপ পড়েছে
জ্ঞানের, অভিজ্ঞতার। দেখা যাক,
মহাভারত কীভাবে এঁকেছে মহাবলী
হনুমানকে।
• হনুমান এবং ভীম দু’জনেই পবনপুত্র।
সেদিক থেকে দেখলে, তাঁরা
ভ্রাতা। পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাসের
সময়ে হনুমান এক অসুস্থ এবং বৃদ্ধ বানরের
বেশে ভীমকে দেখা দেন। ভীম
ছিলেন অসম্ভব আত্মগর্বী। তাঁকে
শিক্ষা দেওয়াই ছিল বজ্রঙ্গবলীর
উদ্দেশ্য। ভীমের পথ রুদ্ধ করে অসুস্থ
বৃদ্ধের ছদ্মবেশে হনুমান শুয়ে ছিলেন।
ভীম তাঁকে অতিক্রম করতে চাইলে
তিনি ভীমকে বলেন তাঁর লেজটি
সরিয়ে চলে যেতে। ভীম বহু
চেষ্টাতেও সেই লেজ সরাতে
পারেননি। শেষে তিনি অনুভব করেন,
এই ব্যাক্তি কোনও সাধারণ বানর নন।
তিনি হনুমানের শরণ নেন।
• হনুমানের সঙ্গে অর্জুনেরও দ্বৈরথ
ঘটেছিল। সেতুবন্ধ রামেশ্বরমে
অবস্থান কালে অর্জুন এক ক্ষুদ্র বানরের
সম্মুখীন হন। অর্জুন সেই বানরের সামনে
গর্ব ভরে বলেন, বানরদের সাহায্য না
নিয়ে রামচন্দ্র একাই সেই সমুদ্র-সেতু
নির্মাণ করতে পারতেন। তির যোজনা
করেই তো সেটা করা সম্ভব ছিল। ক্ষুদ্র
বানর অর্জুনকে চ্যলেঞ্জ জানায় ওই
কাজ করে দেখাতে। অর্জুন ব্যর্থ হলে
ক্ষুদ্র বানরের ছদ্মবেশ ত্যাগ করে হনুমান
প্রকট হন। অর্জুন তাঁর শরণ নিলে, তিনি
অর্জুনের রথশীর্ষে অধিষ্ঠান করবেন
বলে বর দেন। অর্জুনের রথের উপরে তাই
‘কপিধ্বজ’ শোভা পায়।
• কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষ হলে অর্জুন রথ
থেকে নেমে আসেন। কৃষ্ণ, হনুমানকে
ধন্যবাদ জানান রথশীর্ষে অবস্থান
করার জন্য। হনুমানও ধ্বজা-রূপ ত্যাগ করে
স্বমূর্তি ধারণ করেন। তিনি বিদায়
নিলে রথটি ভস্মে পরিণত হয়। হতবাক
অর্জুনকে কৃষ্ণ জানান, ভয়ানক সব অস্ত্র
এই রথের উপরে বর্ষিত হয়েছে। হনুমান
রক্ষা না-করলে রথটি অনেক আগেই
ভস্মীভূত হতো।
• মাত্র চারজন ব্যাক্তি শ্রীকৃষ্ণের মুখ
থেকে ভগবদ্গীতা শুনেছিলেন এবং
বিশ্বরূপ দর্শন করেছিলেন। এঁরা হলেন—
অর্জুন, সঞ্জয়, বর্বরিক এবং ঘটোৎকচ।
কিন্তু একথা মনে রাখতে হবে, ধ্বজ
হিসেবে রথশীর্ষে অবস্থানের
কারণে হনুমানও ছিলেন সেই
তালিকায়।
'মহাভারত' এ কিভাবে উল্লেখিত হয়েছেন হনুমান 'মহাভারত' এ কিভাবে উল্লেখিত হয়েছেন হনুমান Reviewed by Apon on August 01, 2017 Rating: 5
Powered by Blogger.