প্রকৃত ধর্ম ও কর্ম

প্রকৃত ধর্ম হল ভগবানকে ভালোবাসা। ভগবানের দেওয়া নিয়মনীতি গুলির দ্বারা পরিচালিত হওয়া। ধর্মং তু সাক্ষাদ ভগবদ প্রণীতম। ধর্ম হল স্বয়ং ভগবানের দ্বারা প্রণীত নিয়ম কানুন। আর কর্ম বলতে কো্নও কিছু করাকে বোঝায়্ কিন্তু যে কোনও কর্ম করা উচিৎ নয়্ একমাত্র ধর্ম অনুমোদিত কর্মই করনীয় । ধর্ম ছাড়া কর্ম কুকর্ম, কর্ম ছাড়া ধর্ম সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। ধর্মশাস্ত্র একমাত্র মানুষদের জন্যই রচিত, পশু- পাখিদের জন্য নয়। তাই মানুষকে ধর্মবিহিত কর্ম করে চলতে হয়। কি কর্ম করতে হবে, কি কর্ম বর্জন করতে হবে সেই সম্বন্ধে শ্রীমদ্ভগবদগীতায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—
যজ্ঞার্থাৎ কর্মনোহন্যত্র লোকোহয়ং কর্মবন্ধনঃ।
তদর্থং কর্ম কৌন্তেয় মুক্তসঙ্গ সমাচর।।
“শ্রীহরির প্রীতি সম্পাদন করার জন্য কর্ম করা উচিত, অন্যথায় সেই সমস্ত কর্মই জীবকে দুঃখময় জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ করে । তাই হে কুন্তীপুত্র অর্জুন, ভগবানের সন্তষ্টি বিধানের জন্য কেবল তোমার কর্তব্য অনুষ্ঠান করো এবং তার ফলে তুমি সদাসর্বদা জড় জগতের বন্ধন থেকে মুক্ত থাকতে পারবে। (গীতা-3/9)
“প্রকৃতপক্ষে যে কর্ম মানুষকে কৃষ্ণভক্তির পথে পরিচালিত করে না তার পাপকর্ম এবং যে বিদ্যা্ কৃষ্ণকে হৃদয়ঙ্গম করতে সাহায্য করে না তা ভ্রান্ত। যদি কৃষ্ণভাবনামৃতের অভাব হয় তা হলে বুঝতে হবে যে, সেই কর্ম এবং সেই বিদ্যা সম্পুর্নরুপে নির্থক।” (ভাঃ ৪/২৯/ ৪৯)
#শ্রীব্রম্মা তার পুত্র সনৎকুমারকে শিক্ষা দিচ্ছেন—
শ্রীকৃষ্ণবিমুখং মূঢ়ং দ্বিজমেব নরাধমম।
তীর্থং দানং তপ পুন্যং ব্রতং নৈব পুনাতি তম।।
অর্থাৎ “ ব্রাম্মন হলেও যে ব্যক্তি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি বিমুখ, সেই মূঢ় নরাধম তীর্থপর্যটন দান, তপস্যা, পুন্য কর্ম, ব্রত পালন করে কখনই পবিত্র হতে পারে না।”
(নারদপঞ্চরা্ত্র ২/১/৬০)
সুতারাং তার সদগতি নেই। জড় জাগতিক সুখ সুবিধা লাভের অধিকারী হবে মাত্র।
ভগবানে নাম কীর্তন মাহাত্ম #ঋগ্বেদের ( ১ মন্ডল, ১৫৬ সূক্ত, তয়া ঋক) বলা হয়েছে —
আহস্য জানন্তো নাম চিদ্বিবক্তন মহন্তে বিষ্ণো সুমতিং ভজামহে ওঁ তৎ সৎ।
“হে বিষ্ণো , চিন্ময় নাম স্বপ্রকাশ রুপ। সেই নাম উচ্চারণ মহাত্ম্য না জেনেও কেবল নামাক্ষর অভ্যাস করি , তবুও নাম প্রভাবে দিব্যজ্ঞান পেতে পারবো। আপনিই স্বয়ং নামরুপে প্রকাশিত।”
নরক গ্রহের অধিপতি #শ্রীযমরাজ তার দূতদের নির্দেশ দিয়েছেন—
জিহ্বা ন বক্তি ভগবদ গুণনামধেয়ং
চেতশ্চ ন স্মরতি তচ্চরণারবিন্দম।
কৃষ্ণায় নো নমতি যচ্ছির একদাপি
তানানয়দ্বমসতোহকৃতবিষ্ণুকৃত্যান।।
“ হে দুতগগন , সেই সমস্ত পাপীদেরই আমার কাছেনিয়ে এসো , যাদের জিহ্বা শ্রীকৃষ্ণের নাম গুন কীর্তন করে না যাদের চিত্ত একবারও শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্ম স্মরন করে না, এবং যাদের মস্তক একবারও শ্রীকৃষ্ণের চরনে প্র্নত হয়না। আর যারা মনুষ্য জীবনের একমাত্র কর্তব্য বিষ্ণুব্রত বা হরি ভক্তি অনুশলিন করে না। তাদের আমার কাছে এই নরকে নিয়ে এসো। (শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/২৯)
বিষ্ণু পুরাণে বলা হয়েছে (১/৪/৩১)—
"কৃষ্ণের পূজা নাহি করে যেইজন ৷
কোনদিন মুক্তি নাহি পায় সেই জন ৷"
কল্কি পুরাণে বলা হয়েছে (৩৫/১২৯,১৩০) —
"ধর্ম বলে যাহা কিছু পরিচিত হয় ৷
কৃষ্ণভক্ত শূন্য হলে ব্যর্থ সমুদয় ৷৷
ধর্মের লাগিয়া যত কর আয়োজন ৷
কৃষ্ণভক্তি শূন্য হলে সব অকারণ ৷৷
🌵 হরে🎶কৃষ্ণ 👏হরে🎶কৃষ্ণ 👏কৃষ্ণ🎶কৃষ্ণ 👏হরে🎶হরে 👏হরে🎶রাম 👏হরে🎶রাম 👏রাম🎶রাম 👏হরে🎶হরে 🌵
প্রকৃত ধর্ম ও কর্ম প্রকৃত ধর্ম ও কর্ম Reviewed by Apon on August 01, 2017 Rating: 5
Powered by Blogger.